ঘি এর উপকারিতা ও অপকারিতা
ঘি, পুরাতাত্ত্বিক আয়ুর্বেদিক প্রণালীতে অমূল্য বিচারিত একটি প্রতিষ্ঠান রাসায়নিক উপাদান। শরীরের ভিতরের বৈশিষ্ট্যমূলক হিসেবে পরিচিত, যা নিয়ন্ত্রণ করে তার ব্রহ্মন্ডস্থিত ক্ষুদ্রগণনয়। ব্রহ্মধারণ শক্তি বাড়ায়, ত্বকে মৃদুতা দিয়ে স্নিগ্ধ করে এবং প্রতিষ্ঠিত পুষ্টিশক্তি প্রদান করে। এটি দিনের বিভিন্ন সময়ে মাধুর্য বা দুধের স্বাদ দিতে ব্যবহৃত হতে পারে। তাই আজকের প্রবন্ধের আলোচনার বিষয় ঘি এর উপকারিতা ও অপকারিতা।এটি দিনের বিভিন্ন সময়ে মাধুর্য বা দুধের স্বাদ দিতে ব্যবহৃত হতে পারে। তবে, ব্যবহারে মিতি রক্ষা করতে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ অধ্যয়নে হয়তো এর অতিরিক্ত ব্যবহার অশোককর হতে পারে।
ঘি এর উপকারিতা ও অপকারিতা
আমরা কিন্তু ঘি কাঁচা খেতে ভয় পাই তবে সকালে গরম পানির সাথে ঘি খেলে আপনার সার্বিক সুস্থতার জন্য ভালো। বলে শেষ করা যাবে না ঘিয়ের উপকারিতা, ঘি কে সুপারফুড আখ্যা দেয়া হয়েছে। খাবার রান্নায় ঘিয়ের ব্যবহার আদি কাল থেকেই। কিন্তু সকালে খালি পেটে এক চামচ ঘি খেলে কী হতে পারে, তা হয়তো অনেকেরই জানা নেই, খালি পেটে এক চামচ ঘি খেলে শরীরে ম্যাজিকের মতো কাজ করে।
ঘি শরীরকে অন্যান্য খাবার থেকে চর্বিযুক্ত দ্রবণীয় খনিজ এবং ভিটামিন শোষণে সহায়তা করে এবং আমাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। যেহেতু ঘি প্রয়োজনীয় ফ্যাট-দ্রবণীয় ভিটামিন এ, ডি, কে ও ই দ্বারা সমৃদ্ধ, তাই এই উপাদানগুলো প্রতিরোধ-ক্ষমতাসহ আমাদের দেহের নানাবিধ কার্য সম্পাদন করে। আমাদের দেশিয় ঘি-এ অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি-ফাঙ্গাল, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট গুণসমৃদ্ধ হওয়ায় এটি ভাইরাস, ফ্লু, কাশি, সর্দি প্রভৃতির বিরুদ্ধে লড়াই করে।
ঘি হজমশক্তি বৃদ্ধিতে:
হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায় ঘি। পাশাপাশি স্টমাক অ্যাসিডের ক্ষরণ বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে ঘি। ফলে বদ-হজম বা গ্যাস-অম্বল হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। আবার ঘি যে কোনো ধরনের রিচ খাবারকে দ্রুত হজম করাতে সক্ষম।
আরও পড়ুন: মুলার পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা
পুষ্টির ঘাটতিতে:
প্রতিদিন ঘি খেলে শরীরের অভ্যন্তরে যেমন, ভিটামিন এ এবং ই-এর ঘাটতি পূরণ হয় আবার অ্যান্টি-অ্যাক্সিডেন্টের মাত্রাও বৃদ্ধি পায়। এবং পুষ্টির ঘাটতি দূর হওয়ার পাশাপাশি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি:
নিউট্রিশনিস্টদের মতে, ঘির কোনো বিকল্প হয় না নার্ভের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধির বা মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে। ঘি তে উপস্থিত ওমেগা ৬ ও ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড শরীর ও মস্তিষ্ককে চাঙ্গা রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। সম্প্রতি প্রকাশিত কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, এই ২ ধরনের ফ্যাটি অ্যাসিড ডিমেনশিয়া এবং অ্যালঝাইমারসের মতো রোগের প্রকোপ কমাতে বেশ কার্যকর।
ওজন কমায়:
ঘি খেলে ওজন কমে, বরং ঘটনা উল্টা অনেকের ধারণা ঘিয়ে ওজন বাড়ে। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, ঘিতে উপস্থিত এসেনশিয়াল অ্যামাইনো অ্যাসিড শরীরে জমে থাকা অতিরিক্ত চর্বি ঝড়িয়ে ফেলতে সাহায্য করে যার ফলে স্বাভাবিকভাবেই ওজন কমতে শুরু করে। এছাড়াও সারাদিন অতিরিক্ত খাওয়ার সম্ভাবনাকে কমিয়ে দেয়। ঘি এবং গরম পানির সংমিশ্রণ বিপাককে কিকস্টার্ট করে বলে বিশ্বাস করা হয়। এটি শরীরকে আরও দক্ষতার সাথে ক্যালোরি পোড়াতে সহায়তা করে।
জয়েন্টের স্বাস্থ্যের জন্য:
জয়েন্টের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী ঘি থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টির উপাদান। জয়েন্টগুলোর তৈলাক্ততা, শক্ততা হ্রাস এবং নমনীয়তা বৃদ্ধিতে অবদান রাখতে পারে সকালে গরম পানির সাথে ঘি খেলে। যাদের জয়েন্ট সমস্যা রয়েছে এমন ব্যক্তিদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী ।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়:
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং চর্বি-দ্রবণীয় ভিটামিন ঘিয়ে বেশি থাকে যেমন এ, ডি, ই এবং কে। এই পুষ্টিগুলো শক্তিশালী ইমিউন সিস্টেমকে সমর্থন করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নিয়মিত উষ্ণ পানির সাথে ঘি খাওয়া শরীরের সংক্রমণ বা অসুস্থতা প্রতিরোধের ক্ষমতাতে অবদান রাখতে পারে।
ঘি এর অপকারিতা
এনার্জির বৃদ্ধি ও শরীরকে চাঙ্গা করে ঘিতে উপস্থিত উপকারি ফ্যাটি অ্যাসিড বিশেষত লরিক অ্যাসিড, একদিকে যেমন এনার্জির ঘাটতি দূর করে শরীরকে চাঙ্গা করে, আবার শরীরকে সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
আরও পড়ুন: যষ্টিমধু খাওয়ার উপকারিতা
সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে:
আয়ুর্বেদ শাস্ত্র বলছে, প্রকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হলো ঘি। ত্বক এবং ঠোঁটের হারিয়ে যাওয়া আদ্রতা ফিরিয়ে আনতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে ঘি। শুধু এটাই নয়, প্রতিদিন অল্প পরিমাণ ঘি’র সঙ্গে যদি সামান্য জল মিশিয়ে মুখে লাগালে ত্বকের বয়স কমে যায়।
দেহের তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে:
শীতকালে এর কার্যকারিতা অবর্ণনীয়, শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে ঘি খাওয়ার শুরু করতে পারেন। যার কারণে শীত থেকে বাঁচতে বেশি করে ঘি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা।
সূত্র:-হেলথ শটস.
Pingback: কোলাজেন সমৃদ্ধ খাবার - amaderkhabar
👍👍👍👍
Thanks