ঈল মাছ শরীরে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে
ঈল মাছের শরীরে প্রায় ৬০০ ভোল্টের বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়। আমরা সাধারণত বাসাবাড়িতে যে বিদ্যুৎ ব্যবহার করি তা ২২০ ভোল্টের, ঈল মাছকে এই অঙ্গগুলো ২ ধরনের বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে সাহায্য করে, বেশি ভোল্টের বিদ্যুৎ ও কম ভোল্টের বিদ্যুৎ। বিজ্ঞানীরা এখনো সমাধান করতে পারেননি ঈল মাছের ব্যাপারে সকল রহস্য, তাই সব বিষয় এখনো স্পষ্ট নয়।
ঈল মাছ শরীরে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে
ঈল মাছ নিজেদের শরীরে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে পারে, তাই স্পর্শ করলে শক লাগে। এই প্রশ্নের সবচেয়ে এটাই সহজ উত্তর। কিন্তু মাছগুলো কীভাবে নিজেদের শরীরে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে?
দক্ষিণ আমেরিকার আমাজনে ঈল মাছ পাওয়া যায়। ঈল মাছ সাধারণত নদীর নিচের স্তরে কাদামাটিতে থাকে। আবারে এদের মাঝেমধ্যে ওপরের স্তরেও দেখা যায়। ওপরের দিকে আসে মূলত খাবার সন্ধানে। ঈল মাছ শিকারকে সামনে পেলে ইলেকট্রিক শক দিয়ে আহত করে ও শিকারকে গিলে খায়। ঈল মাছ নিজেদের দেহে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ তৈরির জন্য মাথা ও লেজ বাঁকিয়ে কাছাকাছি নিয়ে আসে যা অনেকটা ইংরেজি ইউ (U) অক্ষরের মতো।
তাদের মাথার অংশ ধনাত্মক ও লেজের অংশ ঋণাত্মক দিক হিসেবে কাজ করে। ঈল মাছের শরীরে প্রায় ৬০০ ভোল্টের বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়। এই পরিমাণ বিদ্যুৎ শিকারকে আহত বা মেরে ফেলার জন্য যথেষ্ট। এই শকে যেকোনো মানুষও মারা যেতে পারে। কতটা মারাত্মক এই ৬০০ ভোল্টের বিদ্যুৎ তার একটা উদাহরণ দেওয়া যাক। আমরা সাধারণত বাসাবাড়িতে যে বিদ্যুৎ ব্যবহার করি তা ২২০ ভোল্টের, তাহলে বুঝুন।
কেন ঈল মাছের শরীরে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়?
আসলে বিদ্যুৎ তৈরির জন্য ঈল মাছের শরীরে ৩ জোড়া অঙ্গ থাকে। অঙ্গগুলোর নাম যেমন. প্রধান অঙ্গ হান্টারস বা শিকারী অঙ্গ ও স্যাচস অঙ্গ। এই অঙ্গগুলো ঈল মাছের শরীরের হাজার হাজার বৈদ্যুতিক সেল দিয়ে তৈরি। ঈল মাছকে এই অঙ্গগুলো ২ ধরনের বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে সাহায্য করে, বেশি ভোল্টের বিদ্যুৎ ও কম ভোল্টের বিদ্যুৎ। কোষগুলো একটির সঙ্গে আরেকটি যুক্ত থাকে। তাই মাথা ও লেজ কাছাকাছি নিলেই ধণাত্মক ও ঋণাত্মক দিক মিলে তৈরি হয় বিদ্যুৎ।
আরও পড়ুন: চশমার পাওয়ার বলতে কি বুঝায়
এখনো বিজ্ঞানীরা ঈল মাছের নিজেদের শরীরে তৈরি বিদ্যুতে কোনো ক্ষতি হয় কিনা বা তারা নিজেরাই এ বিদ্যুতে শখ খায় কিনা, তা আবিষ্কার করতে পারেননি। এখনো অনেক বিজ্ঞানীই সম্ভাবনার কথা বলেছেন। বিজ্ঞানীদের মতে, ঈল মাছের শরীরে আছে চর্বির স্তর, হয়ত সেই চর্বিই ঈলকে বিদ্যুৎস্পৃষ্টের হাত থেকে রক্ষা করে।
কিন্তু ঈল মাছের তৈরি এ বিদ্যুৎ কি পানিতে ছড়িয়ে পড়ে, বৃষ্টি হলে বিদ্যুতের তার ছিড়ে পানিতে পড়লে যেমনটা হয়। আসলে হে ঈল মাছের তৈরি বিদ্যুৎও পানিতে ছড়িয়ে পড়ে, তবে তা খুব বেশি জায়গা জুড়ে নয়। ঈল মাছের তৈরি বিদ্যুৎ সাধারণত বিশ মিটারের বেশি দূরে কাজ করে না। তাই কোনো মাছ ২০ মিটারের ক্ষেত্রের মধ্যে চলে এলে সেগুলো শক খায়। আবার ক্ষেত্রের বাইরে থাকলে কোনো সমস্যা নেই। যদি বিদ্যুতের তার ছিড়ে নদীতে ফেলে দেন, তাহলে নদীর সব মাছ মারা যাবে না। কারণ সব পানি তো বিদ্যুতায়িত হবে না। তাই ঈল মাছের বিষয়টাও অনেকটা সেরকম।
বিজ্ঞানীরা এখনো সমাধান করতে পারেননি ঈল মাছের ব্যাপারে সকল রহস্য, তাই সব বিষয় এখনো স্পষ্ট নয়। হয়তো ভবিষ্যতে ঈল মাছের ব্যাপারে আরও বিস্তারিত জানা যাবে।
সূত্র:-সায়েন্টিফিক আমিরিকান, উইকিপিডিয়া.
Good Information
ধন্যবাদ আপনাকে
Pingback: বৃষ্টির ফোটা গোলাকার হয় কেন - amaderkhabar