স্বাস্থ্য ও পুষ্টি

কী খাবেন আর কী খাবেনা খালি পেটে

স্বাস্থ্যকর খাবারও খালি পেটে অস্বাস্থ্যকর হতে পারে।
অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকার পর কার্বোনেইটেড কোমল পানীয় ও ফলের রস খেতেও মানা করা হয়। পান করলে পেটে গ্যাসের সমস্যার পাশাপাশি নানান সমস্যা দেখা দিতে পারে। আবার দই খেলেও সমস্যা হতে পারে পেট খালি থাকলে। খালি পেটে কলা খেতেও বারণ করা হয়। তাই দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকার পর যেসব খাবার পেটে স্বস্তি দেবে, সে বিষয়ে ড. অঞ্জলি ফঠক।

খালি পেটে যেসব খাবার খাওয়া উপকারী:
পেঁপে:- খালি পেটে খাওয়া জন্য অন্যতম সেরা খাবার। রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আঁশ যা পেটের কার্যক্রমের সহায়তা করে। দেহের দূষিত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে, ফলে সারাদিন হালকা অনুভূত হয়।

কিশমিশ:- খালি পেটে কাঁচা কিশমিশ খাওয়া যতটা না উপকারী, তার চেয়েও বেশি উপকারী সারা রাত ভিজিয়ে খেতে পারলে। তাছাড়া সার্বিক স্বাস্থ্যের জন্য এটা উপকারী।

তরমুজ:- খালি পেটে খাবার জন্য উৎকৃষ্ট একটা খাবার তরমুজ। বিশেষ করে গরমে শরীর আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে। পেটের জন্য উপকারী। আর্ এতে থাকা লাইকোপেন বিভিন্ন স্বাস্থ্য সুবিধা দেয়।

চিয়া বীজ:- খালি পেটে খাওয়ার জন্য উপকারী একটি খাবার চিয়া বীজ। দৈনিক খাদ্যতালিকায় এই বীজ রাখতে পারলে নানান সুবিধা পাওয়া যাবে। রয়েছে ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর চর্বি ও ম্যাগনেসিয়াম যা মেজাজ ভালো রাখার পাশাপাশি হজম শক্তি উন্নত করে।

কাঠবাদাম ও খেজুর:- খেজুর হজম শক্তি উন্নত করে। সারারাত ধরে ভিজিয়ে রাখা কাঠবাদাম খালি পেটে খেলে হজম সহজ হয়। আর পাকস্থলীর ক্ষারের মাত্রায় ভারসাম্য আনে। তবে খেতে হবে পরিমিত মাত্রায়।

খালি পেটে যেসব খাবার মানা:

বেকারির খাবার:- তাই দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকার পর এসব খাবার এড়াতে হবে পেস্ট্রি, কেক, পিৎজা এই ধরনের খাবার। খেতে মজা লাগলেও, পেট খালি অবস্থায় এসব খাবার পাকস্থলীর আস্তরণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেই সাথে তৈরি করে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা।

টক ফল:- টক ফল, যেমন- লেবু, কমলা, আনারস, পেয়ারা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হলেও খালি পেটে খাওয়া ঠিক না। বিশেষ করে এসবে থাকা উচ্চ মাত্রায় ফ্রুকটোস ও আঁশ জৈবিক প্রক্রিয়া ধীর করার পাশাপাশি পেটে অস্বস্তি তৈরি করে।

চকলেট:- প্রক্রিয়াজাত চিনি ও চিনি দিয়ে তৈরি খাবার ও পানীয় মোটেই স্বাস্থ্যকর নয়। খালি পেটে যে কোনো চিনিযুক্ত বা মিষ্টি খাবারের ক্ষেত্রে ‘লাল পতাকা’ দেখাতে হবে।

কাঁচা সবজি:- খালি পেটে খেলে আঁশ হজম হতে দেরি হওয়ার কারণে এক ধরনের অস্বস্তি কাজ করবে। তাই আঁশে ভরপুর থাকে কাঁচা সবজি যা হজম হতে দেরি হয়। পেট ব্যথারও কারণ হতে পারে। তাই খালি পেটে সালাদ খাওয়া যাবে না।

ঝাল খাবার:- খালি পেটে ঝাল, ভাজা পোড়া খাবার খাওয়া মোটেই বুদ্ধিমানের কাজ না। পাকস্থলীর আস্তরণে সমস্যা তৈরি করে। পেট খালি হতেও ঝামলা বাধায়। মরিচ পাকস্থলীর অ্যাসিডের সাথে বিক্রিয়া করে পেটব্যথা তৈরি করতে পারে।

কলা:- তাই দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকলে কলা এড়াতে হবে। অনেকেই খালি পেটে কলা খাওয়া উপকারী মনে করেন। তবে ম্যাগনেসিয়ামে ভরপুর এই ফল দ্রুত হজম হয়ে যায়। ফলে রক্তচাপ বাড়ার পাশাপাশি হৃদস্বাস্থ্যে সমস্যা তৈরি করতে পারে।

টমেটো:- এতে থাকা ট্যানিক অ্যাসিড হজম রসের সঙ্গে মিলে পাকস্থলীতে প্রদাহ তৈরি করতে পারে। তাই খালি পেটে খাওয়া উচিত না।

শসা:- দুই খাবারের মাঝে নাস্তা হিসেবে শসা ভালো। অনেকক্ষণ খালি পেটে থাকলে পাকস্থলীতে হজম করার মতো পর্যাপ্ত রস উৎপন্ন হতে সময় নেয়। যে কারণে শসা হজম করা শক্ত হয়ে যায়। ফলাফল গ্যাস ও পেট ব্যথা।

দুগ্ধজাত খাবার:- দই, দুধ বা দুধের তৈরি খাবারে ল্যাক্টিক অ্যাসিড থাকে, দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকার পর, দুধের তৈরি খাবার খেলে, সেথায় থাকা ল্যাক্টিক অ্যাসিডের ব্যাক্টেরিয়া পাকস্থলীর অ্যাসিডের সংস্পর্শে্ এসে মরে যায়। ফলে দেখা দেয় অ্যাসিডিটির সমস্যা।

কোমল পানীয়:- খালি পেটে পান করলে দেখা দিতে পারে পেটে অস্বস্তি। কার্বোনেইটেড কোমল বা সোডা পানীয় সাধারণভাবেই শরীরের জন্য খারাপ। আর সেই সাথে রক্ত চলাচলে সমস্যা তৈরি, রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বৃদ্ধিও করে। আর দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকার পর অন্যান্য খাবারে সঙ্গে এই ধরনের পানীয় গ্রহণ করলে হজমেও সমস্যা তৈরি হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *