ডাবের ভেতর পানি আসে কোথা থেকে
ডাবের ভেতর পানি আসে কোথা থেকে
বেশির ভাগ ফলেই রস থাকে সেই রস পিষে বের করতে। পাকা ফল কাটলে রস গড়িয়ে পড়ে বটে, কিন্তু ফলের রসকে কখনোই পানির সঙ্গে তুলনা করা যায় ভাবনার বিষয়ই বটে।
আবার অনেক ফল কাঁচা অবস্থায় রসও থাকে না। কিন্তু নারকেল বা ডাবের হিসাবটা আলাদা কাঁচা কিংবা পাকা, যে কোন অবস্থাতেই এর ভেতর পরিস্কার পানি এই পানি কখনোই অন্য ফলের রসের মতো নয়।
রস আর শাঁস মিলেমিশে থাকে ফলে আর ডাবে রয়েছে পানির চেম্বার। সেই চেম্বারে সাঁদা শাঁসের স্তর থাকে সেই স্তরে দুধের মতো সাদা রস থাকে। কিন্তু নারকেলের পানি আর শাঁসকে কখনো এক করলে চলবে না।
পৃথিবীতে এত ফল থাকতে নারকেলের ভেতরই বা পানি আসে কোত্থেকে?
জাইলেম নামে এক ধরনের টিস্যু থাকে উদ্ভিদের। জাইলেম টিস্যুগুলো গাছের একেবারে শিকড় থেকে কাণ্ড-শাখা-প্রশাখা-পাতা ও ফল পর্যন্ত বিস্তৃত থাকে। তবে জাইলেম টিস্যু আর দশটা সাধারণ টিস্যুর মতো নয়। জাইলেম টিস্যুগুলো শিকড় থেকে পাতা পর্যন্ত খুব সরু নল বা জালিকার মতো করে ছড়িয়ে থাকে। মাটি থেকে পানি পতা ও ফল-ফুল পর্যন্ত পৌঁছে যায় এই নল বেয়ে।
সেটা কীভাবে?
কোন তরলে সরু নল ডোবালে দেখা পাওয়া যায় তরল নল বেয়ে বেশ খানিকটা উপরে উঠে গেছে। তরলে পৃষ্ঠটানের কারণেই এ ঘটনা ঘটে। জাইলেম টিস্যুগুলো এত সূক্ষ্ম যে, পানির পৃষ্ঠটান মহাকর্ষ বলকে পরাজিত করে পানিকে গাছের মাথা পর্যন্ত পৌঁছে দেয় এবং এই পানিই উদ্ভিদের বা গাছের দেহের প্রতিটা কোষে ছড়িয়ে পড়ে।
ভেবে দেখেছেন ক্ষুধা জিনিসটা আসলে কী
কোন জীবদেহ আকারে বড় হয় শুধু দেহ নয়, একটা নির্দিষ্ট আকারে না পৌঁছানো পর্যন্ত পাতা, ফুল ও ফলও বাড়তে থাকে। কীভাবে এই বৃদ্ধি হয় জীবদেহের?
খুব কম কোষ থাকে, জীবদেহে জীবনের শুরুতেই কোষ বিভাজনের মাধ্যমে কোষের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে। কোষ বিভাজিত হয় তা তো সবাই জানেন। আবার এই কোষ বিভাজনকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। উদ্ভিদের দেহে দুই উপায়ে কোষ বিভাজন হয়। যার একটার নাম ক্যারিওকাইনেসিস বা নিউক্লিয়ার বিভাজন। নিউক্লিয়ার বিভাজনের নাম শুনে আবার নিউক্লিয়ার বোমার কথা ভাববেন না নিউক্লিয়ায় বোমায় তেজস্ক্রিয় পরমাণুদের নিক্লিয়াসে বিভাজন হয়।
অপরদিকে জীবদেহের একেকটা কোষ লক্ষ-কোটি পরমাণু দিয়ে তৈরি। আবার প্রতিটি কোষের নিজস্ব নিউক্লিয়াস আছে। যা পরমাণুর নিউক্লিয়াসের তুলনায় লক্ষ গুণ বড়। কোষের এই নিউক্লিয়াস বিভাজিত হয়ে একাধিক নতুন কোষের জন্ম দেয় এই প্রক্রিয়াকেই বলে ক্যারিওকাইনেসিস।
অপর কোষ বিভাজনটির নাম সাইটোকাইনেসিস। এ প্রক্রিয়ায় মাধমে কোষের সাইটোপ্লাজমে ভাঙন ধরে। যে কোন উদ্ভিদের দেহে বা ফলে এই ২ ধরনের বিভাজনে ভারসাস্য থাকে। বিভাজনটির কোনোটা বেশি আর কোনোটা কম হওয়ার কোনো কারণ নেই।
পেঁয়াজ কাটলে চোখ জ্বলে কেন
এই ভারসাম্যটা থাকে না ডাব বা নারকেলের ক্ষেত্রে। ডাবের ভেতর ক্যারিওকাইনেসিস প্রক্রিয়ায় কোষ বিভাজিত হয় এবং সে সময় সাইটোকাইনেসিস প্রক্রিয়া বন্ধ থাকে। শুধু মাত্র নিউক্লিয়ার বিভাজনটা চলে। সাইটোকাইনেসিস বিভাজন বন্ধ থাকায়, কোষের মধ্যে একের পর এক নিউক্লিয়াস জমা হয়।
এমন পরিস্থিতি হয় যে, ভেতরে নতুন নিউক্লিয়াসকে দেওয়ার মতো কোনো জায়গা থাকে না। তখন কোষের ভেতরে পানিগুলো সরিয়ে দেয় বা কোষ থেকে সেই পানিই বেরিয়ে এসে আলাদা চেম্বারে জমা হয়। অপর দিকে মুক্ত নিউক্লিয়াসসহ কোষগুলো দিয়ে তৈরি হয় নারকেলের খোলস। নারকেলের ভিতরে পানি কম থাকে বলেই খোসা এতটা শক্ত আর শুষ্ক হয়। অন্যদিকে জমা হওয়া এই পানিই এক সময় ঘন হয়ে নারকেলের শাঁস তৈরি করে।
সূত্র: হাউ ইটস ওয়ার্কস.
Pingback: লিপস্টিক ব্যবহার আন্ডারটোন বুঝে - amaderkhabar
Allah is well
রাইট