তোকমা বীজের উপকারিতা
গরম আবহাওয়ার দেশগুলোর বহু মানুষ তোকমা বীজের শরবত পান করে। তোকমা-বীজ মূলত দেহের বিপাকক্রিয়া ধীর করে এবং কার্বোহাইড্রেটকে গ্লুকোজে রূপান্তরের পদ্ধতি নিয়ন্ত্রণ সহজ হয়। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান প্রদাহ, ক্যানসারের কোষ প্রতিরোধ এবং বার্ধক্য রোধে সহায়তা করে বেশ। তোকমা বীজের শরবত সারাদিন আপনার মেটাবোলিজম বা বিপাক ক্রিয়ার হার বেশি রাখবে, ফলে আপনার খাবার ভালোভাবে হজম হবে এবং বাড়তি ক্যালোরি জমে থাকবে না।
তোকমা বীজের উপকারিতা
স্বাস্থ্যসচেতেন মানুষদের কাছে বেশ পরিচিত তকমা দানা, আবার ওজন কমাতে দারুণ উপকারী। তোকমা-বীজ অন্যতম আয়ুর্বেদিক ভেষজ চিকিৎসায়ও। দিয়ে তৈরি শরবত বিপাকক্রিয়ার হার কমায়, অতিরিক্ত ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে ও রক্তে ভালো কোলেস্টরল তৈরি করে।
এই তোকমা বীজ ক্ষুধা দমন, অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ থেকে বিরত রাখে যার ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। এই তোকমা বীজের শরবত একই সঙ্গে পেটের প্রদাহ, পীড়া, কোষ্ঠকাঠিন্য ও ক্লান্তি দূর করে। পাশাপাশি কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে তোকমা বীজ। তোকমা বীজ রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে, ফলে ডায়াবেটিসও নিয়ন্ত্রণে থাকে।
তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অল্প পরিমাণ তোকমার বীজ বা দানা রাখলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি বিপাক প্রক্রিয়াও বৃদ্ধি করে থাকে, পাশপাশি হজমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে তোকমা দানা।
গবেষণায় দেখা গেছে, উপকারী কোলেস্টেরল উৎপাদন করে তোকমার দানা দেহের জন্য। এছাড়াও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, রক্তে চর্বির পরিমাণ কমানো, শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে হার্ট সুস্থ রাখে। তোকমা হাড় গঠনে সাহায্য করে।
উদ্ভিজ্জ ওমেগা অ্যাসিডের সবচেয়ে ভালো উৎস হলো তোকমার দানা। তোকমার দানার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান প্রদাহ, ক্যানসারের কোষ প্রতিরোধ এবং বার্ধক্য রোধে সহায়তা করে বেশ। তোকমা বীজে হাইড্রোফোলিক উপাদান থাকায় খুব সহজে পানি শোষণ করে।
তোকমা বীজের শরবত ভেতর থেকে শরীরকে ঠাণ্ডা রাখে। লিভারকে ভালো রাখে বা ঠাণ্ডা ও মৌসুমী জ্বরের সমস্যা হয় না নিয়মিত তোকমার শরবত পান করলে। রোজায় যারা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হয়, তাদের জন্য তোকমা বীজের শরবত মহৌষধ।
আও পড়ুন: ডুমুর খাওয়ার উপকারিতা
তোকমা বীজ কি এবং এর পুষ্টিগুণ
রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করতে কার্যকর তোকমা বীজ। তোকমা বীজের শরবত মূলত দেহের বিপাকক্রিয়া ধীর করে দেয় এবং কার্বোহাইড্রেটকে গ্লুকোজে রূপান্তরের পদ্ধতি নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়। তাই টাইপ টু ডায়াবেটিস যাদের রয়েছে, তারা তোকমা বীজ নিয়মিত খেতে পারেন।
তোকমার শরবতের গরমকালে দেহের তাপমাত্রা কমাতে বেশ সহায়তা করে। যার কারণে গরম আবহাওয়ার দেশগুলোর বহু মানুষ তোকমা বীজের শরবত পান করে। তোকমা বীজের শরবত সুস্বাদু করার জন্য চিনি, মধু এবং কোথাও কোথাও নারিকেল দুধ দেওয়া হয়।
তোকমা বীজের স্বাস্থ্য উপকারিতা
তোকমা বীজ কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর করতে খুবই কার্যকর। অল্প তোকমা বীজ অল্প পানিতে ভিজিয়ে রেখে কিছুক্ষণ পর তা দুধে মিশিয়ে খেলেও উপকার পাওয়া। তোকমা বীজ হজমের সমস্যাও দূর করতে বেশ সহায়তা করে।
এসিডিটি দূর করতেও কার্যকর তোকমা বীজ, পেটের এসিড নিয়ন্ত্রণ করে জ্বালাপোড়া দূর করে। এ জন্য পানিতে অল্প তোকমা বীজ ভিজিয়ে রেখে পান করতে হবে। দেহের ক্ষতিকর পদার্থও দূর করতে সহায়ক।
তোকমা বীজ ত্বকের নানা সমস্যায় ব্যবহার করা যায়, এ জন্য অল্প কিছু তোকমা বীজ গুঁড়া করে তাতে অল্প নারিকেল তেলের সঙ্গে মাখিয়ে ত্বকে লাগাতে হয়, এটি নানা চর্মরোগ নিরাময়ে কাজ করে। তোকমার বীজ একজিমা ও সোরিয়াসিস নিরাময়ে খুব কার্যকর। চুলের সুস্থতার জন্য নিয়মিত খাওয়া যেতে পারে তোকমা বীজ।
ওজন কমাতে তোকমা বীজের ভূমিকা
দেহের ওজন কমাতে তোকমা বীজের জুড়ি নেই। পানিতে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখলেই তোকমা বীজটি ফুলে ওঠে ও সেই পানি কিংবা নানা মসলা দিয়ে তা সুস্বাদু করে পান করা যায়। তোকমা বীজের ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড দেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী ও এর নানা উপাদান দেহের চর্বি কমাতে সহায়তা করে। তোকমা বীজে রয়েছে প্রচুর আঁশ, যা বাড়তি ক্ষুধা দূর করে ও পেট দীর্ঘক্ষণ পরিপূর্ণ থাকার অনুভূতি দেয়।
তোকমা বীজ ব্যবহারের সহজ রেসিপি
এক গ্লাস পানিতে এক টেবিল চামচ পরিমাণ তোকমার বীজ ভিজিয়ে রাখুন। ছোট ছোট কালো বীজগুলো সারারাত ভিজে ফুলে উঠবে। সকালে এই পানি ও ফুলে ওঠা তোকমা বীজসহ খালি পেটে পান করে নিন। এতে এক চা চামচ খাঁটি মধু যোগ করতে পারেন।
ঠান্ডা প্রতিরোধী উপাদান রয়েছে তোকমা বীজে। দেহকে ঠান্ডার বিরুদ্ধে প্রতিরোধক্ষমতা গড়তে সহায়তা করে তোকমা বীজে।
এই তোকমা বীজের শরবত সারাদিন আপনার মেটাবোলিজম হার বেশি রাখবে। ফলে আপনার খাবার ভালোভাবে হজম হবে এবং বাড়তি ক্যালোরি জমে থাকবে না। তোকমার বীজ অতিরিক্ত ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে বেশি খেয়ে ফেলার প্রবণতা নিয়ন্ত্রণ করে। নিয়মিত তোকমা শরবত পান করার পাশাপাশি অতিরিক্ত মিষ্টি বা ভাজাভুজি ত্যাগ করলে বিনা পরিশ্রমেই দেহ হবে ছিপছিপে ও মেদ ভুঁড়ির সমস্যা একেবারেই চলে যাবে।
Pingback: খাওয়ার সময় পানি খেলে কি হয় - amaderkhabar
Pingback: বিস্কুট খেলে কি ওজন বাড়ে - amaderkhabar
Pingback: স্বাস্থ্যকর খাবার কাকে বলে|উপদানগুলো কি কি - amaderkhabar